ফেঞ্চুগঞ্জে দোকান কর্মচারীর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মোমিনছড়া চা বাগানের রেললাইনের পাশ থেকে নয়ন দেবনাথ (১৮) নামে এক দোকান কর্মচারীর মরদেহ উদ্দার করা হয়েছে।
গত শুক্রবার সকাল ৯টায় এই মরদেহ উদ্ধার করে সিলেট রেলওয়ে পুলিশ। নিহত নয়ন কুমিল্লা জেলার জাঙ্গুয়া বাজার থানার দৌলতপুর গ্রামের দিলীপ চন্দ্র দেবনাথের ছেলে।
এ ঘটনা নিহত নয়নের বাবা বাদী হয়ে সিলেট রেলওয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, নিহত নয়ন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারের উপমা ফ্যাশন নামে একটি কাপড়ের দোকানে কর্মচারী হিসেবে চাকরি করত। সেই দোকানের মালিক দুর্জয় দেবনাথ ভৌমিক গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়নের মাকে মোবাইলে কল দিয়ে জানান, নয়ন ইদানিং অস্বাভাবিক চলাফেরা করছে বলে জানান। এরপর ওইদিন রাতে নয়ন একপর্যায়ে তার মাকে মোবাইলে কল করে বলে, ‘আমাকে মেরে ফেলবে’।
তখন নয়নের মা দোকানের মালিক দুর্জয়ের চাচা চন্দন দেবনাথ ভৌমিককে কল করে বলেন, ‘আজ রাত পর্যন্ত আমার ছেলেকে দেখেশুনে রাখেন’। ওইদিন রাত সাড়ে ১০টা থেকে নয়নের মোবাইল ফোন বন্ধ পান তার মা ও বাবা। দীর্ঘ সময় ফোন বন্ধ দেখে চিন্তিত হয়ে যান নয়নের মা ও বাবা।
রাত ১১টায় দোকানের মালিক দুর্জয় দেবনাথ ভৌমিককে ফোনে কল করে নয়নের কথা জিজ্ঞেস করেন। দুর্জয় নয়নের মোবাইল ফোন বন্ধ দেখে এত রাত তাকে কোথায় খুঁজবো বলে নয়নের মাকে জানান।
গত শুক্রবার দুপুর ২টায় নয়নের ফোনে কল দেন তার মা। নয়নের ফোনে কল রিসিভ করে রেলওয়ে পুলিশের একজন সদস্য জানান, নয়নের মরদেহ সিলেট রেলওয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
রেলওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ধারালে অস্ত্র দিয়ে নয়নের গলা কাটা। মাথা খুঁজে পাওয়া যায়নি। ডান হাত অর্ধ মুষ্টি বন্ধ অবস্থায়। বাম হাতের বোগল থেকে পেট পর্যন্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা। বাম হাত খুঁজে পাওয়া যায়নি। বুকে থেতলানো কালো জখম। পিছনে কোমড়ের উপরের অংশ কেটে নাড়িভূড়ি বেরিয়ে এসেছে।
নয়নের বাবা দিলীপ চন্দ্র দেবনাথ রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় জানান, আমার ছেলে নয়নের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ কুমিল্লায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে সিলেট রেলওয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে চাইলে রেলওয়ে পুলিশ অভিযোগে আসামিদের নাম লিখেননি। শুধু অভিযোগ ও ঘটনার বর্ণনা লিখেছেন। আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারের নয়নের এক সহপাঠী বলেন, নয়ন খুবই শান্ত স্বভাবের ছেলে। সে কখনো কারো সঙ্গে ঝগড়া করেনি। কিভাবে যে কি হলো, মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।