বিশ্বনাথে বিএনপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানকে খুঁজছে পুলিশ; ১৫৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বিশ্বনাথ প্রতিনিধিঃ
সিলেটের বিশ্বনাথের দশঘর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানসহ বিএনপির ১৫৫ নেতা-কর্মীকে আসামি করে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
বিশ্বনাথ থানার এসআই নুর হোসেন বাদী হয়ে শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) রাতে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় উপজেলার দশঘর ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এমাদ উদ্দিন খানকে প্রধান আসামি করে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরও ১২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারি কাজে বাধা, নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ব্যালট বাক্স ও নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করতে চাইলে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখা, ব্যালট বাক্স ও নির্বাচনী সরঞ্জামাদি বহনকারী পিকআপ গাড়ি ভাঙচুর এবং হামলার অভিযোগে এ মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মুসা বলেন, ‘শুক্রবার রাতে মামলা হয়েছে। শনিবার (৩১) মামলাটি নথিভুক্ত করে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
দীর্ঘ ১৭ বছরের অপেক্ষার পর গত বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ইউনিয়নের ১৪ হাজার ১১৮ জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ১০ হাজার ৫২৫ জন ভোটার। এর মধ্যে বাতিল ভোটের সংখ্যা ২০৯। শতকরা ভোট প্রয়োগের হার ৭৪.৫৫%।
নির্বাচনে ৩৮৫ ভোটের ব্যবধানে ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থী জবেদুর রহমানকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের এমাদ উদ্দিন খান। ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এমাদ উদ্দিন খান পান ৩ হাজার ১৬৬টি ভোট ও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জবেদুর রহমান পান ২ হাজার ৭৮১টি ভোট।
এছাড়া ‘ঘোড়া’ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) সামছু মিয়া লয়লুছ পেয়েছেন ২ হাজার ৭৪১ ভোট, ‘আনারস’ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী (বিএনপির বিদ্রোহী) আবুল হোসেন পেয়েছেন ১ হাজার ৫০৬ ভোট ও ‘লাঙ্গল’ প্রতীকে জাতীয় পার্টির মনোনীত আবদুল মন্নান পেয়েছেন ১২২ ভোট।
বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোটারদের সরব উপস্থিতিতে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। তবে ফলাফল ঘোষণা করাকে কেন্দ্র করে উপজেলার মাছুখালী বাজারস্থ একটি কেন্দ্রে উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ব্যালট বাক্স ও নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করতে চাইলে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখেন ধানের শীষের প্রার্থীর সমর্থকরা। তখন ব্যালট বাক্স ও নির্বাচনী সরঞ্জামাদি বহনকারী পিকআপ গাড়ি ভাংচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ কয়েক ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।