বিয়ানীবাজারে প্রবাসী বাহার খুন : দুই আসামীর যাবজ্জীবন
বিয়ানীবাজারের ডাকঃ
বিয়ানীবাজারের প্রবাসী বাহার উদ্দিন (৩২) খুনের ঘটনায় এজাহার নামীয় দুই আসামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক ইব্রাহিম মিয়া এই রায় ঘোষণা করেন।
ঘোষিত রায়ে প্রতিবেশী গ্রামের আপন দুই ভাই আলতাফ হোসেন লালা ও মুসলিম উদ্দিনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন আদালত। তারা উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের পাঞ্জিপুরী গ্রামের আব্দুল লতিফ লতু মিয়ার ছেলে।
২০১৩ সালের ১০ এপ্রিল কুশিয়ারা নদীর দুবাগ বাজারের খেয়াঘাট থেকে বাহারের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ। হত্যাকান্ডের দীর্ঘ ৫ বৎসর পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি এই হত্যা রহস্য উদঘাটন করে। নিহত বাহার উদ্দিন বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের গয়লাপুর গ্রামের ময়নুল ইসলাম ময়না মিয়ার পুত্র।
এ ঘটনায় ৯ জনকে আসামী করে নিহতের পিতা বিয়ানীবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-৩, তারিখ- ১১/০৪/২০১৩ইং) দায়ের করেন। মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা বিয়ানীবাজার থানার এস.আই অরুপ কুমার চৌধুরী আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তবে মামলার বাদী ময়নুল ইসলাম ময়না মিয়া চুড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন দাখিল করলে সিলেটের সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডি পুলিশকে নির্দেশ দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিআইডি এ মামলায় প্রবাসী বাহার উদ্দিনের বাগদত্তা স্ত্রী কুলসুমা বেগম ও তার ভাই আলতাফ হোসেন লালা এবং মুসলিম উদ্দিনসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
জানা যায়, নিহত প্রবাসী বাহার উদ্দিনের সাথে একই ইউনিয়নের পাঞ্জিপুরী গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ লতু মিয়ার স্কুল শিক্ষিকা কন্যা কুলসুমা বেগমের আক্বদ সম্পন্ন হয়। মুত্যুর প্রায় ১০ মাস আগে টেলিফোনে সম্পন্ন হওয়া বাগদত্তা স্ত্রীকে ঘরে তুলতে ২০১৩ সালের ৩১শে মার্চ সৌদিআরব থেকে দেশে আসেন বাহার। পরিবারের ৯ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। দেশে আসার পর ৮ এপ্রিল রাতে তার বাগদত্তা স্ত্রী কুলসুমা তাকে খবর দিয়ে নিজ বাড়িতে নেন। এর দু’দিন পর কুশিয়ারা নদীতে তার লাশ পাওয়া যায়।
এদিকে সোমবার আদালত রায় ঘোষণাকালে মামলার অপর আসামীদের বেকসুর খালাস প্রদান করেন। বাদী পক্ষের আইনজীবি এডভোকেট দেলোওয়ার হোসেন দিলু বলেন, আদালত দুই আসামী যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেছেন। এতে আমরা সন্তুষ্ট।
অপরদিকে আসামীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট আব্দুল খালিক ও এডভোকেট আয়শা বেগম শেলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এডভোকেট রঞ্জিত।