মধ্যরাতে দুবাই প্রবাসীর গোঙানীর শব্দ, দুই সন্তান নিয়ে পালালেন স্ত্রী
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
ফেনী শহরের নাজির রোড এলাকায় মো. সোহেল (৩৫) নামে দুবাই প্রবাসী এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়েছেন তার স্ত্রী বলে অভিযোগ উঠেছে। মধ্যরাতে প্রবাসী সেই যুবকের গোঙানীর শব্দ শুনতে পান প্রতিবেশীরা। বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) রাতে এ ঘটনা ঘটে। ৩৫ বছর বয়সী প্রবাসীর নাম মো. সোহেল। তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুনবতী ইউনিয়নের খাটরা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। শুক্রবার সকালে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন সোহেলের স্ত্রী শিউলি আক্তার। নিহতের চাচাতো ভাই ফাহাদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, প্রায় ১২ বছর ধরে দুবাই রয়েছেন সোহেল। আট বছর আগে দেশে ফিরে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথ ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের শিউলি আক্তারকে বিয়ে করেন তিনি। এরপর আবার দুবাই চলে যান। বছর দেড়েক আগে ফেনীর সুফি সদর উদ্দিন সড়কে চৌধুরী সুলতানা ম্যানসন ভবনের ষষ্ঠতলায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন তারা।
স্বামী বিদেশ থাকায় সাত বছরের রিহান ও চার বছরের জান্নাতকে নিয়ে সেই ফ্ল্যাটেই থাকতেন স্ত্রী শিউলি। দেড় মাস আগে ছুটিতে দেশে আসেন সোহেল। কিন্তু কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে সে সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেননি ফাহাদ উদ্দিন মাহমুদ। স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে বাবার বাড়ি যাওয়ার কথা বলে দুই সন্তান নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যান শিউলি। এরপর শুক্রবার সকালে ফ্ল্যাটে সোহেলের গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়।
পঞ্চমতলায় থাকা ভাড়াটিয়া এক নারী বলেন, রাত দেড়টার দিকে ওপর থেকে এক ধরনের আওয়াজ পেয়ে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু কোনো চিৎকারের আওয়াজ নয়। ওপরে থাকা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কিছু হচ্ছে আঁচ করতে পারি। তবে কিছু কিছু আওয়াজ আসে যেন সোহেল ‘ও মা’ করে ডাকছেন। এরপর আর কোনো শব্দ পাইনি। তিনি আরো বলেন, একপর্যায়ে শিউলিকে দেখি দুই সন্তান নিয়ে চলে যাচ্ছেন। জিজ্ঞেস করলে বাবা মারা গেছেন বলে জানান তিনি। এরপর আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনে ওপরে উঠি। দেখি ফ্ল্যাটের বাইরে তালা ঝুলছে। একই সঙ্গে ভেতর থেকে স্রোতের মতো ভেসে আসছিল রক্ত। এতে আমাদের সন্দেহ হয়। এরপর ষষ্ঠতলায় থাকা সোহেলের আত্মীয়দের বিষয়টি জানানো হয়।
ফেনী সদর মডেল থানার ওসি মো. নিজাম উদ্দিন জানান, বেলা ১১টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্ত্রী পলাতক রয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত চলছে।