যেমন আছেন জাতীয় পতাকার প্রথম নক্সাকার শিব নারায়ন দাস
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্ক:
স্বাধীনতার আন্দোলন যখন তুঙ্গে সেই সময় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকার নক্সা যিনি করেছিলেন, সেই শিব নারায়ণ দাশ ভাল নেই। শারীরিকভাবে অসুস্থ শিব নারায়ণ দাশ রাজধানীর মনিপুরীপাড়ায় স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন। ছেলেটি একটি দুর্ঘটনায় কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে অসুস্থ শিব নারায়ণ দাশ পরিবার নিয়ে সঙ্কটে পড়েছেন বলে জানিয়েছে সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘স্পিক আউট’। এই পরিবারের জন্য অর্থ সংগ্রহে নেমেছে তারা। ‘স্পিক আউট’-এর সিনিয়র ম্যানেজার সুমাইয়া শামসুদ্দোহা বলেন, পরিবারের প্রাত্যহিক ব্যয় নির্বাহের পাশাপাশি ওষুধ, বাজার খরচ ও বাসাভাড়া নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাশ। তিনি বলেন, ‘জাতীয় পতাকার ডিজাইনারের জন্য আমরা একটা প্রচেষ্টা নিয়েছি, পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা চাই, সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগে এ মহান ব্যক্তির জন্য স্থায়ী সহযোগিতা আসুক। তার পরিবারের নিয়মিত খোঁজ-খবরও রাখছি আমরা।’
বর্তমান পরিস্থিতি জানতে শিব নারায়ণ দাশকে ফোন করা হলে তিনি শনিবার বিকালে বলেন, ‘কষ্টের মধ্যে বেঁচে আছি, এটাই আর কি। এর বেশি কিছু আমি বলতে চাই না। আমার বলার কিছু নেই।’ অসুস্থতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ। শরীরটা এই ভাল, এই খারাপ। কিছুক্ষণ আগেও ঘুমিয়ে ছিলাম, আবার জেগে উঠেছি। এভাবে চলছে।’ অসুখটা কি প্রশ্ন করা হলে শিব নারায়ণ দাশ বলেন, ‘এটা আমার শ্বাসকষ্ট। ওষুধপত্র খেয়ে চলি।’
১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে প্রথম বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো হয়েছিল। লাল-সবুজের ভেতরে হলুদ রংয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র সংবলিত ওই পতাকার নক্সা করেছিলেন সে সময়ের ছাত্রলীগ নেতা শিব নারায়ণ দাশ। ১৯৭০ সালের ৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইকবাল হলের (বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ১৯৮ নম্বর কক্ষে বসে পতাকার এই নক্সা করেছিলেন তিনি। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে সরকার শিল্পী কামরুল হাসানকে পতাকার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে বলে। কামরুল হাসান শিব নারায়ণ দাশের আঁকা মানচিত্র সংবলিত পতাকা থেকে মানচিত্র বাদ দিয়ে যে পতাকাটি ডিজাইন করেন সেটিই এখন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।