লোভাছড়ার পাথর নিলাম-পুনঃ নিলাম নিয়ে ফের বিভ্রান্তি
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্ক:
সিলেটের লোভাছড়া পথর কোয়ারির জব্দকৃত ১ কোটি ঘনফুট পাথর নিলাম-পুনঃ নিলাম নিয়ের ফের ব্রিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর বলেছে পুন:নিলাম বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুসারে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে মেসার্স সোমা এন্টারপ্রাইজকে এ নিলামের গ্রহিতা হিসাবে নির্বাচন করা হয়েছে। আর মেসার্স সোমা এন্টারপ্রাইজ দাবি করেছেন এ নিলামে তিনি অংশ গ্রহনই করেননি। এদিকে নিলাম ও পুন:নিলাম বিজ্ঞপ্তির মালামালের বিবরণে পার্থক্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মেসার্স সোমা এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার নজরুল ইসলাম।
রৃহস্পতিবার পুন: নিলাম বিজ্ঞপ্তির খোলার তারিখ ছিল। আর লোভাছড়া পাথর ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো দাবি করেছে লোভাছড়ার পাথর গুলো তাদের নিজ মালিকানাধীন, সেখানে সরেজমিনে কোন পাথর জব্দ করা হয়নি।
সিলেটের লোভাছড়া পাথর কোয়ারিতে ১০ থেকে ১৭ জুলাই পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে প্রায় এক কোটি ঘন ফুট পাথর জব্দ করে। পরিবেশ অধিদপ্তর দাবি করে, লোভা নদীর দুই পাড়ে স্তুপ আকারে থাকা ওই পাথরের কোন মালিক না থাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের অভিযানে এক কোটি ঘন ফুট পাথর জব্দ করা হয়। যা নিলামের জন্য নিলাম বিজ্ঞপ্তি গত ১৭ জুলাই প্রকাশ করে পরিবেশ অধিদপ্তর। যা গত ১৯ জুলাই একটি স্থানিয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশিত হয়।
এই নিলামে মোট ৫ জন অংশ গ্রন করেন। গত ২১ জুলাই নিলাম খোলা শেষে যার মধ্যে সর্বোচ্চ ৩০ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকার দরদাতা হন মেসার্স সোমা এন্টারপ্রাইজ। পরে ২১ জুলাই এ নিলাম বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে একই জব্দ পাথর এর বিক্রির জন্য পুন: নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
সেখানে বিজ্ঞপ্তির ৪ নম্বর ক্রমিকে প্রকাশিক মালামালের বিবরণে পরিবর্তন এনে আগের নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত ”লোভা নদীর জিরো পয়েন্ট হতে সুরমা ব্রিজ পর্যন্ত” কথা পরিবর্তন করে পুন: নিলামে ” লোভা নদীর জিরো পয়েন্ট থেকে লোভার মুখ পর্যন্ত” উল্লেখ করে হয়। এতে নিলামে জব্দ এলাকা প্রায় ৫ কিলোমিটার কমে যায়। পুন: নিলাম বিজ্ঞপ্তির খোলার তারিখ ছিল ২৩ জুলাই শুক্রবার।
ওই দিন মাত্র ২টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যাক্তি ১১ কোটি ও ১২ কোটি টাকা দর দিয়ে নিলামে অংশ গ্রহন করে। পরে বৃহস্পতিবার গভীরাত পর্যন্ত পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন যৌথ বৈঠক করে প্রথম নিলামের সর্বোচ্চ দরদাতা মেসার্স সোমা এন্টারপ্রাইজকে নিলাম লাভকারি হিসাবে নির্বাচন করে এবং আজ শুক্রবার সকালে মেসার্স সোমাএন্টারপ্রইজের প্রোপাইটার নজরুল ইসলামের বাড়িতে নিলাম প্রাপ্তির চিটি পাঠায় পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন জানান, জুলাই মাসের ১০ থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত লোভাছড়ায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে লোভা নদীর দু তীরে অভিযান করে কোন মালিক না পাওয়ায় বে-ওয়ারিশ হিসাবে ১ কোটি অবৈধ পাথর জব্দ করেন। যা দু- দফা নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে মেসার্স সোমা এন্টারপ্রাইজকে নিলামী জয়ি হিসাবে আজ শুক্রবার সকালে চিটি দেয়া হয়েছে।
এদিকে সোমা এন্টাপ্রাইজের প্রোপাইটার নজরুল ইসলাম জানান, দুটি নিলাম বিজ্ঞপ্তির মালামালের বিবরণে এলাকার ব্যবধান হওয়ায় পুনঃ নিলামে তার প্রতিষ্ঠান অংশ গ্রহন করেনি। এমনকি ২৩ জুলাই পরিবেশ অধিপ্তর ও জেলা প্রশসকের কাছে তার প্রতিষ্ঠানের দাখিলকৃত সিডিউল ফেরত দেয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। এ অবস্থায় পরিবেশ অধিদপ্তর তাঁর প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে কি ভাবে নির্বাচন করেন। এখন পরিবেশ অধিদপ্তর যদি প্রথম নিলাম বিজ্ঞপ্তি অনুসারে মালামাল বুঝিয়ে দেয় তা হলে তিনি এ নিলাম গ্রহন করতে রাজি আছেন।
এদিকে লোভাছড়া পাথর ব্যবসায়ীদের সংঘঠন নোয়াবাজার আদর্শ পাথর ব্যবসায়ী সমাবায় সমিতির সভাপতি মো: নাজিম উদ্দিন জানান, লোভছড়ায় কোন পাথর জব্দ নাই। ব্যবসায়ীরা তাদের মালিকানার পাথর দাবি করে আইনজীবির মাধ্যমে মালিকানা দাবি করেছেন। এ লিগ্যাল নোটিশ জারি হলেও কোন উত্তর দেয়নি পরিবেশ অধিদপ্তর। অন্যদিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের এ বিতর্কিত কর্মকান্ডের প্রতিবাদে কানাইঘাটে আন্দোলন সংগ্রাম চলছে। আন্দোলন ও আইনী লড়াই এক সাথে চলবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সুত্র: সিলেট প্রতিদিন