সিলেট জেলা পুলিশের মানবিকতা
বিয়ানীবাজারের ডাক ডেস্কঃ
পুলিশকে নিয়ে মানুষের সকল অভিযোগ ম্লান হয়ে যাচ্ছে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে। সিলেট জেলা পুলিশকে প্রায় প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে নানা ধরণের মানবিক ভূমিকায়।
বৃহস্পতিবার সিলেটের গোয়াইনঘাটে করোনার উপসর্গ নিয়ে এক ব্যক্তি মৃত্যুর পর রাস্তায় পড়েছিলেন। কিন্তু সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি। এমন সময় এগিয়ে এলো ‘মানবিক পুলিশ’।
খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিনের নির্দেশে বৃষ্টিতে ভিজে লাশ উদ্ধার করা থেকে শুরু করে জানাজা, কবর খোঁড়া, দাফন সবই করেছে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।
আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশ ছিল প্রথম প্রহরের প্রতিরোধ যোদ্ধা এবং এই করোনা পরিস্থিতিতেও যেন পুলিশই সম্মুখযোদ্ধার ভূমিকায় অবতীর্ণ। এ সময়টা এত কঠিন আর অবাস্তব যে অনেক মানুষ তার স্বাভাবিক মানবিকতাবোধ হারিয়েছে। নিজের রক্তের সম্পর্ককে অস্বীকার করছে। আর সেটা এমনই যে কোনো কোনো স্থানে করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তির লাশ গ্রহণ তো দূরে থাক জানাজা পড়ানোর জন্যও পরিবারের কেউ ছিল না। সেখানে পুলিশের সদস্যরা জানাজা পড়েছেন, কবর খুঁড়েছেন এবং দাফন করেছেন।
জানা গেছে, গতকাল ১৭ জুন (বুধবার) সন্ধ্যায় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের জাহের মিয়ার ছেলে নাজিম উদ্দিন (৪৫) করোনা উপসর্গ নিয়ে ওষুধ কেনার জন্য বাড়ি থেকে বের হন।
নাজিম উদ্দিন বাড়ি ফেরার পথে রাধানগর-হাজীপুর রাস্তায় জাফলং চা-বাগান সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার পাশে মারা যান। করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে নাজিম মারা যাওয়ায় স্থানীয়রা তার লাশে ভয়ে হাত দেননি।
পরে বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) ভোরে রাধানগর-হাজীপুর রাস্তায় অজ্ঞাতনামা একটি লাশ পড়ে আছে খবর পায় গোয়াইনঘাট থানার পুলিশ। খবরটি চলে যায় সিলেটের এসপি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম এর কাছেও।
এরপর পুলিশ সুপার তাৎক্ষণিকভাবে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল আহাদকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেন।
পরে গোয়াইনঘাট থানার পুলিশ জাফলং চা-বাগান সংলগ্ন এলাকা থেকে নাজিম উদ্দিনের লাশ উদ্ধার করেন।
পরবর্তীতে বাদ আসর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল আহাদের নেতৃত্বে মরহুমের জানাজার নামাজ পড়ানো হয়। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করে পুলিশ।
পুলিশের এমন মানবিকতায় মুগ্ধ সাধারণ মানুষ।