সিলেটি ভাষার প্রেমে মশগুল মঈন আলী

সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের সঙ্গে যেখানে বসে কথা বলছিলেন মঈন আলি, সেখান থেকে তার শ্বশুর বাড়ি হাঁটা দূরত্বের পথ। কিন্তু মঈন সিলেট শহরে এলেন প্রথমবার। তার খেলা উপলক্ষে এখানে আসছেন তার স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজনও। শ্বশুর বাড়ি এসে সিলেটি আঞ্চলিক ভাষার শব্দ শেখারও চেষ্টা করছেন তিনি।

মঈনের জন্ম, বেড়ে উঠা সবই বার্মিংহামে। কিন্তু শেকড়টা তার পাকিস্তানে। যাকে বিয়ে করেছেন সেই ফিরোজা হোসনের শেকড় পড়ে আছে এই সিলেটে। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম থেকে আধা কিলোমিটার দূরত্বে পীর মহল্লাতেই এক সময় বাস করতেন মঈনের শ্বশুর এম হোসেন। পরে তিনি যুক্তরাজ্যে থিতু হন। সেখানেই জন্ম ও বেড়ে উঠা ফিরোজার। পরে পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত মঈনকে বিয়ে করেন তিনি। আবু বকর নামে তাদের এক পুত্র সন্তান আছে।

২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে প্রথমবার বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। এরপর ২০১০-১১ মৌসুমে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগও খেলেছেন, ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে এসেছেন একাধিকবার। বিপিএলেও খেলেছেন আগে। তবে এর আগে কখনই তার আসা হয়নি সিলেটে। এবার বিপিএলের দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে সিলেটে প্রথমবার খেলতে এসেছেন ইংল্যান্ডের এই অলরাউন্ডার। রোববার সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি গ্রাউন্ডে  অনুশীলন সেরে জানালেন এবার বেশ আয়োজন করে পরিবাররের সবাইকে নিয়েই আসা হয়েছে তার,  ‘পরিবারের অনেকেই এসেছে। আমার স্ত্রী এখানে। তার বোনরা, আমরা শ্যালক, সবাই আছে। ওরা ঢাকায় আছে, দিন দুয়েকের মধ্যে সিলেটে আসবে ওরা।’

পাকিস্তানে শেকড়, যুক্তরাজ্যে জন্ম আর বেড়ে উঠা। বিবাহ সূত্রে যোগ হয়েছে বাংলাদেশ। মঈনের কাছে তিন দেশই তার বাড়ি,  ‘বাংলাদেশও বাড়ি, পাকিস্তান-ইংল্যান্ড সবই আমার ঘর। সব আমার চোখে এক। আমার সব ইন-লজরা এখানে। অনেক শ্রদ্ধা আছে আমার। সিলেটে আমার এবারই প্রথম। ওরা আমাকে সবসময় বলত, “চলো সিলেটে যাই।” কিন্তু সময় হয়ে ওঠেনি। এবার আসতে পেরে ভালো লাগছে। হতাশাজনক যে বাইরে যেতে পারছি না। তবে এখানে এসে আমার ভালো লাগছে। আমার পরিবার এখানকার। খুবই খুশি।’

শ্বশুর বাড়ির এলাকায় খেলতে এসে কেবল এখানকার হাওয়া গায়ে লাগানোই নয়, আঞ্চলিক শব্দও টানছে মঈনকে। স্ত্রীর কাছ থেকে কয়েকটি সিলেটি শব্দ আগেই শিখেছিলেন, এবারের সফরে আরও কিছু শব্দ আয়ত্ত করার চেষ্টায় সম্প্রতি টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডকে অধিনায়কত্ব করা মঈন,  ‘কয়েকটি সিলেটি শব্দ জানি আমি, এই তো। সত্যি বলতে, আরও বেশি জানতে পারলে ভালো লাগত। চেষ্টা করব আরও শিখতে। এখন হোটেলে লোকেরা আমার সঙ্গে সিলেটি কথা বলছে। চেষ্টা করছি শিখতে।’

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *